কী-বোর্ড থেকে উঠে যাচ্ছে ‘ক্যাপস্ লক’
ক্যাপিটাল অক্ষরে কিছু লিখতে হলে বাম হাতের আঙ্গুল দিয়ে শিফট চেপে অক্ষরটি লিখলেই কাজ হয়ে যাচ্ছে। ক্যাপস্ লক ‘অন’ (চালু) করে অক্ষর লেখা, আবার ক্যাপস্ লক ‘অফ’ (বন্ধ) করা— এতে একটু সময় বেশী লাগে। এ কারণে ক্যাপস্ লক বোতাম কী-বোর্ডে থাকলেও বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এটা অব্যবহৃত থেকে যায়। আর ইংরেজি ছাড়া অন্যকোনো ভাষায় ক্যাপস্ লক প্রয়োজনই হয় না।
এ ছাড়া কম্পিউটার বা ল্যাপটপ যদি পাসওয়ার্ড দিয়ে বন্ধ (লক) করে রাখা হয় এবং পরে তা অন করার সময় পাসওয়ার্ড দেওয়ার পরও যদি তা না খুলে তখন একটি একটি বার্তা ভেসে উঠে ‘পাসওয়ার্ড ভুল, সম্ভাবত ক্যাপস্ লক অন আছে’। ক্যাপস্ লক অন থাকলে পাসওয়ার্ড দিলেও কাজ হয় না। ইমেইল, ফেসবুক বা অন্যকোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এ্যাকাউন্টে ঢোকার সময় যদি ক্যাপস্ লক অন থাকে তাহলে একই সমস্যা হয়। তাই ভুলে যদি কারো আঙ্গুল ক্যাপস্ লকে পড়ে যায় তখন সে বিরক্ত বোধ করে। আর ক্যাপস্ লকের বোতামটি শিফট বোতামের ঠিক উপরেই। এ জন্য লেখার সময় ভুলে ক্যাপস্ লক এ চাপ পড়ে বেশী। এ সব কারণে নতুন কী-বোর্ড থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে ‘ক্যাপস্ লক’ বাটনটি।
অবশ্য ধীরে ধীরে ক্যাপস্ লক বাটনটির ব্যবহার কমে যাওয়ায়— টাইপ রাইটার ও কম্পিউটারে এর গুরুত্ব বুঝাতে এবং এর প্রতি ভালবাসায় সিক্ত হয়ে কিছু মানুষ বেশ ক’বছর ধরে ২২ অক্টোবর (প্রতি বছর) ‘ক্যাপস্ লক ডে’ পালন করে আসছে।
এ প্রসঙ্গে কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ, বাংলা লেখার সফটওয়্যারের উদ্ভাবক ও বাংলা সফটওয়্যার ‘বিজয়’-এর নির্মাতা মোস্তাফা জব্বার দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রযুক্তির অগ্রগতির জন্য কিছু জিনিস তো বিসর্জন দিতেই হয়। আগে কম্পিউটারে বিশেষ করে টাইপ রাইটারে ক্যাপস্ লকের ব্যবহার ছিল। তখন ইংরেজি লেখার জন্য রোমান হরফের ব্যবহার হতো। আর এখন তো রোমান হরফেরই দিন শেষ।”
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, “এনালগ সময়ের জিনিস তো ডিজিটাল সময়ে এসে প্রয়োগ করা যাবে না। এখন আর ক্যাপস্ লকের কোনো কার্যকারিতা নেই। আমাদের জন্য বা এ যুগের জন্য ক্যাপস্ লক কোনো বিষয়ই না। এখন আর ‘ক্যাপস্ লক ডে’ মনে হয় না কেউ ওইভাবে পালন করেন বা মনে রাখেন।”
তবে বাংলা ভাষা-ভাষীদের উদ্দেশে মোস্তাফা জব্বারের আহ্বান হচ্ছে, “‘ক্যাপস্ লক ডে’র পরিবর্তে আমাদের উচিত ‘বাংলা অক্ষর দিবস’ পালন করা।”
আইটি প্রতিষ্ঠান ‘সফটটেক’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মেহেদী হাসান দ্য রিপোর্টকে বলেন, “ক্যাপস্ লকের কিছু ভক্ত রয়েছেন৷ যারা সনাতন টাইপ রাইটার ব্যবহার করতেন, তাদের কাছে এখনো এ বোতামটি খানিকটা গুরুত্ব বহন করে৷ তা ছাড়া প্রতি বছরের ২২ অক্টোবরকে কিছু মানুষ পালন করে ‘ক্যাপস্ লক ডে’ হিসেবে৷ এই দিনটিতে কিছু মানুষ সব ইংরেজি অক্ষর ক্যাপিটাল লেটারে লিখে থাকেন৷”
এদিকে সার্চ জায়ান্ট গুগল-ও ক্যাপস্ লককে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে করছে৷ গুগল ক্রোম অপারেটিং সিস্টেম যুক্ত ল্যাপটপের কী-বোর্ড থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ক্যাপস্ লক৷ এর পরিবর্তে সেখানে একটি ‘সার্চ’ বোতাম দেওয়া হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই বোতাম অধিক সহায়ক হবে৷ সংগ্রহ- দ্য রিপোর্ট২৪ থেকে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন